গুলজার হোসেন উজ্জ্বল : মানুষ গল্প তৈরি করে। তারপর সে চেষ্টা করে তার গল্পটিকে আকর্ষণীয় ও বিশ্বাসযোগ্য করতে। তারপর সে চায় মানুষ তার গল্পটিকে মেনে নিক। কেউ প্রশ্ন না তুলুক। মানুষ ভিন্ন ভিন্ন জীবনযাপন করে। প্রায় সবাই চায় মানুষ তার জীবনধারাকেই শুদ্ধ বলে মেনে নিক। তারপর যারা এসব মেনে নেয় এরকম মান্ষুদের তারা বলে ‘সমমনা’। মানুষ সমমনাদের ভালোবাসে, তাদের নিয়ে জোটবদ্ধ হয়ে থাকতে ভালোবাসে৷ জোট ভারী হলে সে একধরনের উত্তাপ অনুভব করে। এদিক সেদিক হলে ভিন্ন মতের উপর ঝাঁপিয়েও পড়া যায়। এখান থেকেই শুরু হয় মোরাল পুলিশিং, জাজমেন্টাল থিংকিং। এগুলো মানুষের আদিম প্রবৃত্তি। এসব থেকে মানুষ এখনো খুব একটা বের হতে পারেনি। মৌলবাদী থেকে প্রগতিশীল সকলেই কমবেশি এই দোষে দুষ্ট। যেমন ধরুন, চুলে রঙ করা শখের কাজ। 

অনেকেই এটা করে আনন্দ পান। এই আনন্দটুকুই আসল। কিন্তু আপনি ইচ্ছা করলে চুলে রঙ করার বিষয়টাকে জীবনের একটা মহান দায়িত্ব হিসেবে প্রমান করতে পারেন, এটা দিয়ে জীবনকে বদলে দেবার গল্প বলতে পারেন। যখন অনেক মানুষ আপনার গল্পটা বিশ্বাস করবে তখন আপনি একধরনের কাল্ট ফিগারে পরিণত হবেন। এভাবে আপনি একধরনের কওম প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন সেইসব মানুষদের নিয়ে যারা চুলে রঙ করার এই গল্পটি পছন্দ করে এবং চুলে রঙ করলে জীবন বদলে যাবার এই গল্পটি বিশ্বাস করে। এরপরের কাজটি সহজ। আপনার কওমের লোকেরা যারা চুলে রঙ করে না এমন মানুষকে স্থবির, জরাগ্রস্ত, অনগ্রসর বলে ভাবতে শুরু করবে এবং আপনি হবেন তাদের ভাবগুরু। লেখক: চিকিৎসক